যেভাবে নিবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ প্রস্তুতি 


কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ প্রস্তুতি নিবে যেভাবেঃ

১. বিগত বছরের প্রশ্ন গুলো ভাল ভাবে দেখে নাও।

২. ঢাকা, জগনাথ, রাজশাহী, চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরের প্রতিটি প্রশ্ন যত্ন সহকারে রিভিশন দাও।

৩. এত দিন যে সব বিষয় পড়েছ সেগুলো বার বার রিভিশন দাও। তাড়াহুড়া করে নতুন কিছু ধরতে যেও না। আর একটা কথা ভুলেও ফাঁদে পা দেওয়ার চেষ্টা করবে না।

৪. শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি হিসাবে যারা বিগত কয়েক বছরে ভর্তি পরীক্ষায় সফল হয়েছে তাদের পরামর্শ নিতে পার।

৫. মনে রাখবে ভর্তি পরীক্ষায় তোমার এডমিট কার্ড হল তোমার দুই কপি ছবি যার পিছে তোমার নাম ও রোল নাম্বার লিখবে।


এখন কিছু বিষয় ভিত্তিক সাজেশন নিয়ে আলোচনা করা হবে: 

বাংলা : বিগত বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গদ্য ও কবিতা অংশ থেকে বেশ কিছু প্রশ্ন প্রতিবার আসে। সেক্ষেত্রে গদ্যের মূল বিষয়, গদ্য লেখক পরিচিতি, তার সাহিত্যকরুন্ম, জীবনী ইত্যাদি বিষয় জানতে হবে। কবিতার ক্ষেত্রেও তাই। উপন্যাস ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ বা নাটক ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ থেকেও প্রশ্ন আসতে পারে।ব্যাকরুনণ অংশের জন্য ভাষা, বাংলা ভাষা, ব্যাকরুনণ, শব্দ, কারক, সমাস, সন্ধি, বিভক্তি, বচন, বাক্য সংকোচন, বাগধারা, উপসর্গ, অনুসর্গ বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর ভালো অনুশীলন দরকার।

ইংরেজী : বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে ইংরেজীর ক্ষেত্রে গ্রামার অংশে অধিক জোর দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে Parts of speech, Article, Tense, Voice, Narration, Correction, Right form of verbs, Translation, Synoûms, Antoûms, Transformation of sentences, Joining sentence, Comprehension প্রভৃতি বিষয় ভালোভাবে পড়তে হবে। পাশাপাশি ইংরেজ কবি ও সাহিত্যিক, বিশেষ করে যাদের লেখা এইচএসসি(HSC) বা উচ্চ মাধ্যমিকর সিলেবাসে রয়েছে তাদের জীবন ও সাহিত্যকরুন্ম, লেখার বিষয়, উদ্ধৃতি ইত্যাদি খুঁটিনাটি বিষয়ও মনে রাখতে হবে।

রসায়ন : উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীর রসায়ন মূল পাঠ্যবইয়ের মধ্যে থেকে পদার্থের বিভিন্ন অবস্থা, পর্যায় সারণী, রাসায়নিক গণনা, জারণ-বিজারণ, রাসায়নিক বন্ধন, রাসায়নিক বিক্রিয়া, প্রতীক, সংকেত, যোজনী, গাঠনিক সংকেত, আণবিক সংকেত, রাদারফোর্ড, বোরের পরমাণু মডেল বিষয়গুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে।একটি বিষয় সবসময়ই মনে রাখতে হবে, এইচএসসি(HSC) বা উচ্চ মাধ্যমিকর সিলেবাস তো বটেই, ভর্তি পরীক্ষায় সফল হতে হলে বইয়ের সব অধ্যায়ই ভালোভাবে পড়তে হবে। ভর্তি পরীক্ষায় সফল হতে হলে বইয়ের কোনও অধ্যায় এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।

পদার্থ : পদার্থবিজ্ঞানে প্রস্তুতির জন্য উচ্চমাধ্যমিক পাঠ্যবইয়ের প্রথমপত্র থেকে গতির সূত্র, মহাকরুন্ষ ও অভিকরুন্ষ, স্থিতিস্থাপকতা, তাপ, গতিবিদ্যা, ভেক্টর ও স্কেলার রাশি, বেগ, ত্বরণ, বল ও বলের প্রকারভেদ, মাত্রা ও বিভিন্ন পদ্ধতিতে একক ইত্যাদি পড়তে হবে।পদার্থ দ্বিতীয়পত্র থেকে স্থিরবিদ্যুৎ, বিদ্যুৎপ্রবাহের তাপীয় ও রাসায়নিক ক্রিয়া, চৌম্বক পদার্থ, আলোর প্রতিফলন, প্রতিসরণ, ইলেক্ট্রন, প্রোটন, পরমাণুসহ ইলেক্ট্রনের প্রতিটি অধ্যায় থেকে গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞা, সূত্রাবলী, ঘটনা ও কারণ, প্রভাব, পার্থক্য, গাণিতিক সমস্যার সমাধান জানতে হবে। পদার্থ বিষয়ে কিছু প্রশ্ন গাণিতিক হয়। সে কারণে গাণিতিক সমস্যার সমাধানগুলো ভালোভাবে করতে হবে। এর সঙ্গে গাণিতিক সমাধান দ্রুত করতে পারার এটিও আয়ত্ত করতে হবে।

জীববিজ্ঞান : জীববিজ্ঞানের দুটি অধ্যায়। উদ্ভিদবিজ্ঞান ও প্রাণীবিজ্ঞান। উদ্ভিদবিজ্ঞান থেকে পাঠ্যবইয়ের সব অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার, আবিষ্কারকের নাম, প্রয়োজনীয় সংজ্ঞা, উদাহরণ, পার্থক্য, উদ্ভিদের শ্রেণীবিন্যাস, মূল, কা-, পাতা, গোত্র পরিচিতি, সালোক সংশ্লেষণ, শ্বসন, প্রস্বেদন, টিস্যু, টিস্যুতন্ত্র বিষয়গুলো পড়তে হবে।প্রাণীবিজ্ঞান অংশের ম্যালেরিয়ার জীবাণু, হাইড্রা, দেহপ্রাচীর, কলা, কোষ, প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নাম, পরিপাকতন্ত্র, রক্ত ও রক্ত সংবহনতন্ত্র, রেচনতন্ত্র, পেশিতন্ত্র, প্রাণীর প্রজননতন্ত্র ইত্যাদি বিষয় পড়তে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, প্রতিটি বিষয়ের যতটা সম্ভব খুঁটিনাটি বিষয় যেন আপনার আয়ত্তে থাকে।

হিসাববিজ্ঞান : ব্যবসায় শিক্ষা শাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে হিসাববিজ্ঞান। হিসাববিজ্ঞানের প্রশ্ন সাধারণত মৌলিক বিষয়গুলোর ওপর হয়। তাই এ বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে হলে হিসাববিজ্ঞানের প্রতিটি শাখার ওপর ভালো দখল দরকার হবে। মুনাফা ও মূলধন জাতীয় আয়-ব্যয়, সম্পত্তি, দায়, মালিকানা, হিসাববিজ্ঞানের বিভিন্ন নীতি, ঋণ, অবচয়, সঞ্চয় নীতি, অংশিদারী ক্রয়-বিক্রয় মূল্যনীতি, শেয়ার ইস্যু, অনুপাত প্রভৃতি বিষয়ের ওপর ধারণা থাকতে হবে। হিসাববিজ্ঞানে অঙ্ক থাকবে। সেগুলো দ্রুত সমাধান করতে হবে। এজন্যে বাসায় অনুশীলনের বিকল্প নেই।

ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ : ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ থেকেও ভর্তি পরীক্ষায় কিছু প্রশ্ন থাকে। এ বিষয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে হলে ব্যবসায়ের প্রকৃতি ও প্রকারভেদ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, ব্যবস্থাপনার প্রকৃতি ও আওতা, ব্যাংকব্যবস্থা, মুদ্রাব্যবস্থা, বাণিজ্যিক ব্যাংক নীতিমালা ইত্যাদি বিষয় ভালোভাবে জানতে হবে।

সাধারণ জ্ঞান : সাধারণ জ্ঞানের দুটি অংশ। এখানে বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর ওপর প্রশ্ন থাকবে। এ অংশে ভালো করতে হলে অবশ্যই জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক চলতি ঘটনাবলীর ওপর নজর রাখতে হবে। এজন্য জাতীয় দৈনিক পত্রিকা নিয়মিত পড়া এবং বিবিসি, টেলিভিশন, রেডিওর সংবাদ শুনতে হবে। এর বাইরেও বাংলাদেশ অংশের জন্য দেশের ভূ-প্রকৃতি, আয়তন, শিক্ষা, অর্থনীতি, সমাজ, রাজনীতি, উল্লেখযোগ্য স্থাপনা ও স্থপতির নাম, প্রশাসনিক কাঠামো, চলচ্চিত্র, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, খেলাধুলা, আবহাওয়া, সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধ প্রভৃতি বিষয় জানতে হবে।আন্তর্জাতিক অংশের জন্য আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। আন্তর্জাতিক বিষয়ের জন্য জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা, স্থাপনা, স্থাপত্য, স্থপতি, নোবেল পুরস্কার, বিভিন্ন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, রাজধানী, মুদ্রা, ভাষা, বিভিন্ন ধরনের পুরস্কার যেমন অস্কার, পুলিৎজার, বুকার, ম্যাগসেসে, বিশ্বের উচ্চতম, দীর্ঘতম, ক্ষুদ্রতম, বৃহত্তম বিষয়সমূহ, আন্তর্জাতিক চুক্তি, বিশ্বের নামকরা নগর, বন্দর, ব্যয়বহুল শহর ইত্যাদি খুঁটিনাটি বিষয় জানতে হবে। সাধারণ জ্ঞান অংশে ভালো করতে হলে আপনাকে অবশ্যই সবসময় আপডেট থাকতে হবে। সমকালীন ঘটনাপ্রবাহের দিকে নিবিড় নজর রাখতে হবে।এসএসসি(ssc) বা মাধ্যমিকি ও এইচএসসি(HSC) বা উচ্চ মাধ্যমিকর মূল পাঠ্য বিষয় যদি ভালোভাবে পড়ে থাকেন, তাহলে ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব। কেননা এই পাঠ্যবইয়ের বাইরে থেকে সাধারণ জ্ঞান ছাড়া ভর্তি পরীক্ষায় সাধারণত প্রশ্ন কমই আসে।

أحدث أقدم