জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের IIT-তে ভর্তি পরামর্শ


বর্তমান যুগটা তথ্য প্রযুক্তির যুগ। ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য যারা নিজেকে উৎসর্গ করতে চায় প্রযুক্তিবিদ্যায়, তাদের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আই আই টি’ বিভাগ হচ্ছে স্বপ্ন পূরণের একআদর্শ স্থান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হোক বা পড়াশোনা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়বহু শিক্ষার্থীর কাছে এক স্বপ্নপূরীর মতোই।২০০৯ সালে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের কয়েকজন দক্ষ শিক্ষকমণ্ডলী নিয়ে চালু হয় আই আই টি বিভাগ, সম্পূর্ণ করে বললে ‘ইন্সটিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি’।
প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে এই ইন্সটিটিউটের ছাত্র-ছাত্রীরা, পরপর অনেকবার হয়েছে সাউথ এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন এবং ওয়ার্ল্ড ফাইনালিস্ট।বলা যায়, টেকনোলজি সেক্টরের মহারথীরা এই ইন্সটিটিউটে আছেন। তাদের সাথে মাঝে মাঝে ‘টেক আড্ডা’ দেবার সুযোগ যেমন পাওয়া যায়, তেমনি পাওয়া যায় তাদের কাছে স্পেশাল ওপেনক্লাস করার সুযোগ। যখন ইচ্ছে তাদের কাছে প্রোগ্রামিং এর সমস্যা নিয়েও হাজির হওয়া যায়।শহীদ মিনার, জাবিএত এত সুযোগ যেখানে পাওয়া যায়, সেখানে স্থান পাওয়াটা নিশ্চিতভাবেই একটু কষ্টকর। তবে কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলাও ভার!দিনকে দিন প্রতিযোগিতা বেড়ে চলেছে। গত বছর একটি সিটের জন্য লড়াই করেছিল ৬০০ জন মেধাবী শিক্ষার্থী। তাই প্রস্ততি নিতে হবে জোরেশোরে।শুরুতেই কিছু প্রাথমিক তথ্য জেনে নেই।
১। প্রাথমিক তথ্য:Institute of Information TechnologyH Unit
সিট সংখ্যা: ৫৬ছেলে: ২৮মেয়ে: ২৮ (২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী)
২। ভর্তি পদ্ধতি:পুরো ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় দুটি পর্যায়ে।
১. MCQ:মোট ৮০ নম্বরের MCQ পরীক্ষাঅনুষ্ঠিত হয়। সর্বনিম্ন ৩৫%মার্ক পেলে পাশ বলে গণ্য হবে।মানবন্টন:বাংলা– ০৫ইংরেজি– ১৫গণিত– ৪০পদার্থবিজ্ঞান– ৩০
২. ভাইভা:ভাইভাতে কোন নম্বর নেই। সাধারণত প্রথম ৫০ জনকে ভাইভাতে ডাকা হয়।লিখিত ৮০ আর এসএসসি পয়েন্টের১.৫ গুণ এবং এইচএসসি পয়েন্টের ২.৫ গুণ, এই মোট ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে মেরিট লিস্ট তৈরি করা হয়।
৩। ভর্তি যোগ্যতা:২০১৪ সাল বা তার পরবর্তী বছর সমূহে মাধ্যমিক/সমমানের পরীক্ষা এবং ২০১৬ ও ২০১৭ সালের এইচএসসি উত্তীর্ণ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা আবেদন করতে পারবে।শিক্ষার্থীদের উচ্চ মাধ্যমিক এবং মাধ্যমিক উভয় পরীক্ষায় সর্বনিম্ন ৩.৫ থাকতে হবে। এবং পদার্থবিজ্ঞান ও গণিতে এ গ্রেড থাকতে হবে।
৪। প্রস্তুতি:এবার আসি মূল আলোচনায়। যেকোনযুদ্ধে জয়ী হবার সহজ উপায় হচ্ছে কঠিন প্রশিক্ষণ। প্রথমে যুদ্ধের অস্ত্র জোগাড়ের কথা বলি। মেইন বই আর কিছু সহায়ক বই হচ্ছে এই যুদ্ধের প্রধান অস্ত্র। এরপরে নিজের কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা করতে হবে অনুশীলন। প্রয়োজনে ইন্টারনেট, টেন মিনিট স্কুলের ভিডিও আর কুইজের সাহায্য নিতে পারো ।সূত্র গুলো বেশি বেশি লিখতে হবে এবং পড়তে হবেএবার বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতিনিয়ে আলোচনা করা যাক।
বাংলা:বাংলায় মূলত ব্যাকরণ অংশ থেকেই প্রশ্ন আসে। যদিও মাত্র৫ নাম্বার, তবুও ভালোভাবে নিয়মিত বাংলা পড়ে নেওয়া উচিত। নবম-দশম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণ বইটি ভালোভাবে পড়লেই এই অংশে ভালো করা সম্ভব।
ইংরেজি:ইংরেজি থেকে মূলত গ্রামাটিকাল প্রশ্ন আসে। এছাড়াও ভোকাবুলারিতে জোর দেওয়া উচিত। এই বিষয়ের জন্যযত বেশি গ্রামাটিকাল কোশ্চেন সল্ভ করবে ততই ভালো। বেসিক গ্রামারগুলো বারবার ঝালিয়ে নেওয়া উচিত। শব্দের সঠিক অর্থ, বানান এবং সিনোনিম এন্টোনিমগুলো বেশি বেশি পড়লে ভালো হবে।
গণিত:আইআইটির সবচেয়ে বড় খুঁটি হলগণিত। তাই এই অংশের প্রস্তুতিতে কোন গ্যাপ থাকা চলবে না। যেহেতু ভর্তি পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যায় না, তাই সবসময় প্র্যাকটিস করতে হবে ক্যালকুলেটর ছাড়া। উচ্চ মাধ্যমিকের মেইন গণিত বই দুটিই হচ্ছে সিলেবাস। কিন্তু যেহেতু ভর্তি পরীক্ষা এমসিকিউ পদ্ধতিতে হয়, তাই এখন একটু কষ্ট করে খুব দ্রুত শিখে নিবে শর্ট টেকনিকে অংক করার পদ্ধতিগুলো।এখানে কোন চাপ্টারের কোন অংক কম ইম্পর্ট্যান্ট নয়। বারবার করে শুধু অনুশীলন চালিয়ে যেতে হবে। গত বছরের প্রশ্নাবলীগুলো দেখে সেই প্যাটার্নের ম্যাথগুলো বারবার প্র্যাকটিস করতে হবে। বার বার মডেল টেস্ট দিতে হবে ঘড়ি ধরে।
পদার্থবিজ্ঞান:এই ক্ষেত্রেও ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যায় না। তাই এই সাবজেক্টের ম্যাথগুলোও গণিত অংশের মতো করেই প্র্যাকটিস করতে হবে।ম্যাথগুলো সাধারণত সূত্র থেকেই চট করে সমাধান করা যায়। তাই, সূত্র গুলো বেশি বেশি লিখতে হবে এবং পড়তে হবে। পারলে আলাদা করে সূত্রেরএকটা খাতা বানিয়ে ফেল। এটা ফিজিক্স আর ম্যাথ দুটোর জন্যইপ্রযোজ্য।এখন স্মার্টবুকের সাথে পড়াশোনা হবে আর স্মার্টভাবে! এই লিঙ্কে চলে যাও আর দেখে নাও আমাদের স্মার্টবুকগুলো।আমাদের স্মার্টবুকগুলো!নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে বই সম্পর্কে বলতে পারি, সর্বোচ্চগুরুত্ব দিতে হবে শিক্ষাবোর্ডের বইগুলোকে। তারপর নানা রকম ভার্সিটি প্রশ্নব্যাংক, অন্যান্য প্রশ্নব্যাংক থেকে চালিয়ে যেতে হবে অনুশীলন। পরীক্ষার হলে সবসময় মাথা ঠাণ্ডা রাখতেহবে।আত্মবিশ্বাস আর জেদটা থাকতে হবে, এবং অবশ্যই মহান সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রাখতে হবে!প্রতিটি মেধাবী লড়াকু শিক্ষার্থীর জন্য রইল শুভকামনা!
( কোন প্রশ্ন আছে কি মনে?থাকলে নিচের কমেন্ট বক্স এ লিখে জানাতে পার,আমরা উত্তর দিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করব )
أحدث أقدم