সেকেন্ড টাইম প্রস্তুতি নেবে যেভাবে


আজকে সেকেন্ড টাইমারদের কিছু ভুল অভিমত, ধারনা, ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলব।

একটা ছেলের কথা বলি।ছেলেটা ছিল ২০১৫-১৬ এর সেকেন্ড টাইমার। মানে ২০১৪ এইচ এস সি ব্যাচ।কুমিল্লা অথবা নোয়াখালীর।ঠিক মনে নেই।নামটা মনে আছে এখনো। কারনও আছে।ছেলেটা প্রতি সপ্তাহেই কল দিত।ভাইয়া এই সপ্তাহে এই এই সাবজেক্ট পড়ছি।এই এই চ্যাপ্টার পড়ছি।কোন কোচিং এ পড়ত না,কোথাও ভর্তিও ছিল না।ছেলেটার প্রথম টার্গেট ছিল জাবি।তবে ছেলেটা বায়োলজি পড়েনি।তাই মেডিকেলেও দেয়নি।আসলে তার নাকি বায়োলজি ভালো লাগত না। একটা কথাই বলত " ভাইয়া খালি পরীক্ষা দেওয়া বাকি,চান্স ইন শা আল্লাহ হয়েই যাবে।" ছেলেটা কল দিয়েছিল রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাই করবে নাকি IELTS,TOEFL,SAT ইত্যাদি করে বাইরে চলে যাবে।

কি বুঝলা? বেশিরভাগের উত্তর হবে ছেলেটা অতিরিক্ত আত্নবিশ্বাসী ছিল।আর কোন সমস্যা চোখে পড়ছে না তোমাদের?  না পড়ে থাকলেও সমস্যা নাই।আমি বলে দিচ্ছি।

অনেকেই বাসায় প্রস্তুতি নেওয়ার কথা ভাবে।যারা কোথাও ভর্তি আছে,সাথে সেকেন্ড টাইম দিবে এরাই সাধারণত এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়।কোচিং এ গেলে অন্তত গাইডলাইন পাওয়া যায়।ধরলাম তুমি ফার্স্ট টাইম কোচিং করলা,গাইডলাইন জানো।কিন্তু নিজের প্রস্তুতি ভাল হচ্ছে নাকি খারাপ হচ্ছে সেটা কি বাসায় বসে পড়ে যাচাই করা যায়? আর বাসায় পরীক্ষা দেওয়ার চেয়ে কোচিং এ পরীক্ষা দেওয়া অনেক ভাল। সেকেন্ড টাইমার যারা মেডিকেল প্রস্তুতি নিচ্ছ তারা রেটিনাতে করতে পার। আর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, বিশেষ করে জাবি,রাবির জন্য লিজেন্ড কোচিং করতে পার।

এবার আসি সাবজেক্ট ভিত্তিক সমস্যাতে।ভাইয়া,আপু তুমি সেকেন্ড টাইমার। বিলাসিতা করার সময় এটা না।ছেলেটার বায়োলজি পছন্দ না,কিন্তু এইচ এস সি এর দুই বছর কেমনে পড়ল তাহলে? তুমি একটা সাবজেক্ট বাদ দেওয়া মানে অনেক পিছিয়ে যাওয়া। অনেক সুযোগ হারিয়ে ফেলা।সামনের সাত আট মাস ধরে পড়লে এমনিতেই মোটামুটি একটা প্রস্তুতি হয়ে যায়।বেশি দেখা যায় মেডিকেল কোচিং করছিল তাই ম্যাথ পারে না।ভাইয়া কমার্সের ছিলাম। সাধারণ জ্ঞান পড়ি নাই ইত্যাদি। মোট কথা হল যত বেশি পড়বা তত বেশি সুযোগ।

কিছু পাবলিক দেখা যায়।পরীক্ষার তিন চার মাস আগে হঠাত মনে হল তার সেকেন্ড টাইম দেওয়া উচিত।যারা কোথাও ভর্তি আছো তাদের এই সমস্যা বেশি হয়।বন্ধু দিচ্ছে। আমিও দিই।যেন মজার কোন জিনিস।

শুধু একটা বা দুইটা ভার্সিটি নিয়েই পড়ে থাকিও না।হয়ত তোমার লক্ষ্য জাবি বা সাস্ট বা মেডিকেল বা অন্যান্য ।তাই বলে এই দুইটাতেই হয়ে যাবে এরকম আশা করাটা বোকামি।

আরেক ধরনের পাবলিক আছে।এই দুইটাতে পরীক্ষা দিবে।এই গুলাতে দিবে না।ভাইয়া,আপু বিলাসিতা করিও না।প্রস্তুতি নাও,পরীক্ষা দাও।তোমার পছন্দের ভার্সিটিতেই হবে এরকম কোন কথা নাই।

তাহলে কি করবা?

১) কোচিং এ ভর্তি হও। পরীক্ষা দাও।তাহলে নিজের  পরীক্ষার প্রস্তুতি, নিজের অবস্থান নিয়ে ধারনা হয়ে যাবে।

২) সবকিছু পড়ার চেষ্টা করবা।তুমি সেকেন্ড টাইমার। বিলাসিতা করে একটা,দুইটা সাবজেক্ট কম পড়বা বা একটা,দুইটা টপিক কম পড়বা তাহলে তুমি সুযোগ হারাবা,পিছিয়ে যাবা।

৩) প্রয়োজনে ২-৩ জন বন্ধু মিলে কোন ভাইয়া,আপুর কাছে পড়তে পারো।অনেকের আবার কোচিং এ বেশি স্টুডেন্ট এর সামনে প্রশ্ন জিজ্ঞাস করতে লজ্জা লাগে,আনইজি লাগে।তাদের জন্য বলছি।

৪) সেকেন্ড টাইম দিবা নাকি যেটা পড়তেছো সেটাই চালিয়ে যাবা এটা এই মাসেই ঠিক করো।ভর্তি পরীক্ষার ৩-৪ মাস আগে হুট করে সিদ্ধান্ত নিলে চান্সও হবে না,উলটা ভার্সিটির প্রথম বর্ষের রেজাল্ট খারাপ হবে।৩-৪ মাসের প্রস্তুতি নিয়ে হাতেগোনা ২-৩ জন টিকে।তোমার বন্ধু টিকছে এরমানে এই নয় যে তুমিও টিকবা।

৫) সঠিক বই নির্বাচন কর, English এর জন্য অবশ্যই English For comparative Exam, এছাড়া সব সাবজেক্ট এর জন্য টার্গেট প্লাস।
৬) রুটিন বানাবা।রুটিন মেনে চলার চেষ্টা করবা।

শেষে একটা কথা বলি।ভাগ্য নামে একটা ব্যাপার আছে জানো সম্ভবত। যার যার ধর্ম অনুযায়ী ধর্মীয় রীতিনীতি মনে চলবা। সবার ইচ্ছা পূরণ হোক।

Previous Post Next Post