ভর্তিকৃত নবীনদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে যে ছেলেটাকে দেখে মনে হত,এর মত সহজ সরল ছেলে হয়ত দুনিয়াতে আর একটাও নেই, দুই এক বছর যেতে না যেতে তার মাঝে অভাবনীয় পরিবর্তন দেখতে পাই আমি। আর সে পরিবর্তনটা বেশির ভাগই খারাপ কিছুর দিকে। . প্রথম বর্ষের যে ছেলেটা সিগারেটের গন্ধ শুকতে পারতো না, দুই এক বছরের ব্যবধানে সে এখন সেরা গাঞ্জাখোর। প্রতিদিন তার গাঞ্জা না টানলে ঘুমই আসে না। . যে ছেলেটা কখনই পাম্প কি জিনিস বুঝতো না, সেও সময়ের ব্যবধানে বুঝে যায়, মানুষকে পাম্প দিতে হয়, নতুবা মানুষকে খুশি করা যায় না। যে ছেলেটা আগে কখনই মারামারি করেনি, সেও আজকে অপরাজনীতির শিকার হয়ে নিজের ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করতে ব্যস্ত। ফলস্বরুপ হয়ত কখনো তাকে হারাতে হয় চোখ, কখনো বা পাঁ, কখনো বা নিজের মহামূল্যবান জীবনটা। যে জীবনের দিকে চেয়ে আছে আপনার পুরো পরিবার। আপনি কবে পড়াশোনা শেষ করে জব করবেন ও পরিবারকে সাপোর্ট করবেন। বৃদ্ধ বাবা মা আশায় থাকে, একদিন সুদিন আসবেই তাদের। কিন্তু সেই সুদিনটা আর আসেনা হয়ত তাদের। . প্রথম বর্ষের যে মেয়েটা পর্দা করে চলত, সময়ের ব্যবধানে আজ সে তথাকথিত আধুনিক হতে ব্যস্ত।আধুনিকতার দোহাই দিয়ে সে আজকে চ্যাটিং, ডেটিং হ্যাং আউট করতে ব্যস্ত। আর এই আধুনিক হতে গিয়ে জীবন থেকে হারিয়ে ফেলে তাদের পরিবার থেকে পাওয়া মূল্যবোধ, ধর্মীয় রীতিনীতি। এসবের কারনে হয়ত তার জীবনটা লাইন থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়। পরবর্তীতে এ লাইনে ওঠা অনেক কষ্ট হয়ে দাড়ায় তাদের জন্য। . যে ছেলেটা কখনোই মেয়েদের সাথে প্রতারণা করা তো দূরের কথা, কথাই বলত পারতনা, সে আজকে কোন একটা মেয়ের কাছে প্রতারিত হয়ে প্লে-বয় হয়ে গেছে। সে এখন প্রতিনিয়ত কোন না কোন একজন মেয়ের সাথে প্রতারণা করে। অনুরুপ ভাবে মেয়েটিও প্রতারণার স্বীকার হয়ে সহজ সরল ছেলেদের কে ঠকাতে ব্যস্ত। . বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর সাধারণত, বেশির ভাগ ছেলে মেয়েরই জীবনে এরকম পরিবর্তন হয়। আবার অনেকেই ভাল ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী হয় এখানে এসে। যদিও সেটা সংখ্যায় খুবই কম। . প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই নবীনরা চলে এসেছে। উন্মুক্ত, স্বাধীন একটা জায়গায় এসে পড়েছেন আপনারা । এখানে আপনাকে কেউ দিক নির্দেশনা দিবে না, নিজের জীবনকে নিজেকেই পরিচালনা করতে হবে। তাই দেখেশুনে পা ফেলুন। নিজেকে মাদকের ছোয়া থেকে দূরে রাখুন। পরিবার থেকে পাওয়া শিক্ষা ও মূল্যবোধ কে লালন পালন করুন। সর্বোপরি, আপনারা যেন ভাল মানুষ হয়ে বেরিয়ে যেতে পারেন-এই প্রত্যাশা রইল।

Previous Post Next Post