কারক ও বিভক্তি নির্ণয়ের সহজ কৌশল

বাংলা ২য় পত্রঃ কারক ও বিভক্তি

কারক ও বিভক্তি বাংলা ব্যাকরণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কারক বিভক্তি পড়তে হয়না এমন ছাত্রকে পাওয়া যাবেন। কিন্তু কারক বিভক্তি মনে রাখা অনেকেরই কাছে জটিল মনে হয়। ইংরেজি গ্রামারের চেয়ে বাংলা ব্যাকরণ বেশ কঠিণ। আসুন সহজেই জেনে নেই কারক ও বিভক্তি মনে রাখার সহজ টেকনিক। কারক ছয় প্রকার।

১।কর্তৃকারক:যে কাজ করে সেই কর্তা বা কর্তকারক।
যেমন: আমি ভাত খাই। বালকেরা মাছে ফুটবল খেলছে।
এখানে মনে রাখার উপায় হচ্ছে ‘কে’ বা ‘কারা’ দিয়ে প্রশ্ন করে উত্তর পেলে সেই কর্তা বা কর্তৃকারক।
কে ভাত খায়? উত্তর হচ্ছে আমি।  কারা ফুটবল খেলছে ? উত্তর হচ্ছে-বালকেরা।
তাহলে আমি এবং বালকেরা হচ্ছে কর্তৃকারক।

২। কর্মকারক: কর্তা যে কাজ করে সেটাই কর্ম বা কর্মকারক।
যেমন: আমি ভাত খাই,হাবিব সোহলকে মেরেছে।
এখানে মনে রাখার উপায় হচ্ছে ‘কি’ বা ‘কাকে’ দিয়ে প্রশ্ন করে উত্তর পেলে সেই কর্ম বা কর্মকারক।
আমি কি খাই? উত্তর হচ্ছে-ভাত। হাবিব কাকে মেরেছে? উত্তর হচ্ছে-সোহেলকে।

৩। করণ কারক: ক্রিয়া সম্পাদনের যন্ত্র বা উপকরণ বুঝায়।
নীরা কলম দিয়ে লেখে। সাধনায় সিদ্ধি লাভ হয়।
এখানে মনে রাখার উপায় হচ্ছে ‘কীসের দ্বারা’ বা ‘কী উপায়ে’ দিয়ে প্রশ্ন করে উত্তর পেলে সেই করণ কারক।
নীরা কীসের দ্বারা লেখে? উত্তর হচ্ছে-কলম । কী উপায়ে বা কোন উপায়ে কীর্তিমান হওয়া যায়? উত্তর হচ্ছে-সাধনায়।

৪।সম্প্রদান কারক: স্বত্ব ত্যাগ করে দান বা অর্চনা বুঝালে সম্প্রদান কারক। স্বত্ব ত্যাগ না করলে কর্মকারক।
ভিক্ষারীকে ভিক্ষা দাও। গুরুজনে কর নতি।
মনে রাখার উপায় হচ্ছে-কর্মকারকের মত কাকে দিয়ে প্রশ্ন করে উত্তর পাওয়া যাবে।
তবে এখানে স্বত্ব থাকবেনা। যেমন মানুষ ভিক্ষারীকে দান করে কোন স্বত্ব ছাড়াই যাকে বলে নি:শর্ত ভাবে। আবার গুরুজনকে মানুষ সম্মান করে কোন স্বার্থ ছাড়াই।

৫। অপাদান কারক: হতে, থেকে বুঝালে অপাদান কারক হবে।
গাছ থেকে পাতা পড়ে। পাপে বিরত হও।
এখানে কোথা থেকে পাতা পড়ে? উত্তর হচ্ছে-গাছ । কি হতে বিরত হও? উত্তর হচ্ছে – পাপ ।

৬। অধিকরণ কারক:ক্রিয়ার সময় বা স্থানকে অধিকরণ কারক বলে।
আমরা রোজ স্কুলে যাই। প্রভাতে সূর্য ওঠে।
মনে রাখার উপায় হচ্ছে-কোথায় এবং কথন দিয়ে প্রশ্ন করে উত্তর পাওয়া যাবে।
আমরা রোজ কোথায় যাই? উত্তর হচ্ছে-স্কুলে। আর স্কুল একটি স্থান।
কখন সূর্য ওঠে? উত্তর হচ্ছে-প্রভাতে। আর প্রভাত একটি কাল বা সময়।

বিভক্তি মনে রাখার উপায়:
বাংলায় বিভক্তি সাত প্রকার।
প্রথমা বিভক্তি: অ এবং ০ ।
দ্বিতীয়া বিভক্তি: কে এবং  রে ।
তৃতীয়া বিভক্তি: দ্বারা, দিয়া এবং কর্তৃক ।
চতুথী বিভক্তি: দ্বিতীয়া বিভক্তির মত তবে নিমিত্ত বা জন্য বুঝাবে।
পঞ্চমী বিভক্তি: হতে, থেকে এবং চেয়ে ।
ষষ্ঠী বিভক্তি: র এবং এর ।
সপ্তমী বিভক্তি: এ, য় ,তে থাকে।

Previous Post Next Post