জাবির সি ইউনিটের প্রস্তুতি নিবেন যেভাবে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার আর বেশি সময় নেই। তাই যারা এ বছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা ও মানবিকী অনুষদভুক্ত সি-১ ইউনিটে পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক, তাঁদের ভর্তি পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির সুবিধার্তে আজকের এই লেখা। কলা ও মানবিকী অনুষদের অধীন সি-১ ইউনিটে রয়েছে ২টি বিভাগ, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব এবং চারুকলা। ভর্তি পরীক্ষার যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে আলাদা আলাদাভাবে জিপিএ - ৩.০০ থাকতে হবে এবং বাংলা সহ যে কোনো একটি বিষয়ে বি গ্রেড থাকতে হবে।
এবার আসি সি-১ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন কেমন হবে তা নিয়ে আলোচনায়। এ বছরের সার্কুলার অনুযায়ী বাংলার জন্য ১০ নম্বর, ইংরেজির জন্য ১০ নম্বর এবং অনুষদ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের জন্য ৬০ নম্বর বরাদ্দ থাকবে। এখানে অনুষদ সংশ্লিষ্ট বিষয় বলতে বোঝানো হয়েছে, কলা ও মানবিকী অনুষদের অধীন সি-১ ইউনিটে যে ২টি বিভাগ রয়েছে সেই ২টি বিভাগ সংশ্লিষ্ট প্রশ্ন থাকবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের পরবর্তীতে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব এবং চারুকলা বিষয়ে আলাদা আলাদাভাবে ২০ নাম্বারের ব্যবহারিক পরীক্ষা নেওয়া হবে।
কীভাবে প্রস্তুতি নিবেন?
এখন আসি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কলা ও মানবিকী অনুষদ ভুক্ত সি-১ ইউনিটের জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। যেহেতু বাংলা আর ইংরেজিতে ১০ করে বরাদ্দ, সেহেতু এই ২টি বিষয়ে জোর দিতে হবে । বাংলার জন্য নবম-দশম শ্রেণির ব্যাকরণ বইটা খুব ভালোমতো পড়তে হবে, সঙ্গে নবম শ্রেণী আর উচ্চ মাধ্যমিকের সাহিত্য বইগুলো থেকে প্রতিটা অধ্যায়ের লেখক বা কবি পরিচিতি, শব্দার্থসহ যত প্রয়োজনীয় তথ্য আছে পড়ে নিতে হবে। উচ্চ মাধ্যমিকের সাহিত্য অংশগুলোও সাথে পড়তে হবে, এগুলো ছাড়াও সহায়ক হিসেবে জয়কলি বাংলা বিচিত্রা পড়তে পারেন।
ইংরেজির জন্য ভালো মানের গ্রামার বই থেকে গ্রামার পড়তে হবে এবং বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নসংবলিত যে বইগুলো থাকে, সেগুলো থেকে প্রশ্ন সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে। আর ইংরেজি সাহিত্য সম্পর্কিত এমসিকিউ প্রশ্ন ও উত্তরসংবলিত বই নিয়ে পড়লেই ইংরেজির জন্য পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি হবে (সহায়ক হিসেবে জয়কলি ইংলিশ বিচিত্রা পড়তে পারেন)।
বাকি ২টি বিষয় পড়তে হবে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে। এ বছর নতুন নিয়ম, সি-১ ইউনিটে ৮০ নম্বরের মধ্যে ২টি বিভাগ থেকেই ৩০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে, তাই প্রতিটি বিভাগের বিষয়বস্তু সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে।
এই ২টি বিভাগ থেকেই কোনো না কোনোভাবে সাধারণ জ্ঞানমূলক প্রশ্ন থাকবে। তাই সাধারণ জ্ঞানের প্রস্তুতিই নিতে হবে।চারুকলার ৩০নাম্বারের প্রশ্নে ভাল করতে চাইলে চারুকলার ইতিহাস, শিল্পকলার ইতিহাস, বাংলাদেশের স্থাপত্যকলা, সাহিত্য, বাংলাদেশের শিল্পকলা, বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ও চিত্রকর্ম এবং রেনেসাঁ যুগের তথ্যগুলো একটু বেশি পড়তে হবে । 
নাটক ও নাট্যতত্ত্বের ৩০ নাম্বারে ভাল করার জন্য বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতি, নাটক-থিয়েটার, নৃত্য, নববর্ষ,সঙ্গীত (মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক, দেশাত্মবোধক ও অন্যান্য গানসমূহ), বাংলাদেশের চলচ্চিত্র, বাংলা সাহিত্য, বিভিন্ন মিডিয়া (টেলিভিশন, রেডিও, পত্র-পত্রিকা), উপজাতি এসব বিষয় নখদর্পণে রাখতে হবে।
সহায়ক হিসেবে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব এবং চারুকলার ভর্তি প্রস্তুতির জন্য আলাদা বই কিনতে পাওয়া যায়। সেখান থেকে এসব টপিকস পড়তে হবে।
এছাড়া সাম্প্রতিক গুরত্বপূর্ণ খবরাখবরের উপর ভাল দখল রাখতে হবে। এর জন্য পরীক্ষার আগের মাস থেকে বিগত কমপক্ষে ৬মাসের বিভিন্ন তথ্যমূলক ম্যাগাজিন (কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স/কারেন্ট ওয়ার্ল্ড/কারেন্ট নিউজ ) পড়তে হবে। আরো স্বচ্ছ ধারণা পেতে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব এবং চারুকলা বিভাগের বিগত বছরের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নগুলো দেখুন।
সবার শেষে একটা কথা বলবো নাটক ও নাট্যতত্ত্ব এবং চারুকলা বিভাগে চান্স পেতে ব্যবহারিক পরীক্ষার একটু প্রভাব থাকলেও শুরুতেই আপনাকে অনেকখানি এগিয়ে দিবে এমসিকিউতে ভাল মার্কস প্রাপ্তি, তাই সবাই চেষ্টা করবেন এমসিকিউতে ভাল মার্কস রাখতে। এর জন্য প্রস্তুতিও নিতে হবে ভাল। সবার জন্য রইলো শুভ কামনা।

( কোন কিছু জানার থাকলে নিচে কমেন্ট করতে পারেন,আমরা উত্তর দেয়ার জন্য পাশে আছি)
@Admissionbd24

Previous Post Next Post