ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিটে চান্স পাওয়ার উপায়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। নামটি শুনলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা শিহরিত হয়ে উঠেন। মানবিক বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হওয়া যেকোন শিক্ষার্থী ‘খ’ ইউনিটে সফল হয়ে স্বপ্ন দেখতেই পারেন দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ও প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত এই প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার। আর কিছুদিন পরেই শুরু হবে ২০১৭-১৮ সেশনের ভর্তিযুদ্ধ। ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখকে ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা এখন পড়াশুনায় ডুবে আছেন। শেষ সময়ে এসে কোন পদ্ধতি অবলম্বন করলে সহজেই প্রস্তুতি শেষ করা যায় সে ব্যাপারেই আমরা কথা বলবো-

মোট ১২০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা-২৫, ইংরেজী-২৫ ও সাধারণ জ্ঞান-৫০ এই তিনটি বিষয়ে মোট ১০০টি প্রশ্ন থাকবে। এক্ষেত্রে বাংলা-৩০, ইংরেজী-৩০, সাধারণ জ্ঞান-৬০, [ বাংলাদেশ ও আন্ততর্জাতিক ঘটনা-প্রসঙ্গে ৩০ নম্বরের জন্য মোট ২৫টি প্রশ্ন থাকবে।
মৌলিক বিষয়ে (মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পঠিত সমাজবিদ্যা, রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস, ভূগোল, ধর্ম ইত্যাদি) ৩০ নম্বরের জন্য মোট ২৫টি প্রশ্ন থাকবে।]

‘খ’ ইউনিটে বাংলার জন্য ৩০ নম্বরে পাস করতে হলে পেতে হবে ন্যূনতম ৮ নম্বর। বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে ভর্তি পরীক্ষায় ৮ নম্বর পাননি শতকরা ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী। এছাড়াও বাংলায় ভালো নম্বর না থাকায় অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সারির কোন বিভাগে ভর্তি হতে পারেননি। এমনকি অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিই হতে পারেননি। আবার অনেকের ভালো নম্বর থাকায় পিছনের সিরিয়ালে থেকেও ভর্তি হয়েছেন স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাবির ‘খ’ ইউনিটের প্রশ্ন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বাংলা বই থেকেই হুবহু প্রশ্ন এসেছে। যার উত্তর করতে পারলেই আপনি পেতে পারেন ১৫ নম্বরেরও বেশি নম্বর। এক্ষেত্রে আপনাকে অনুসরণ করতে হবে উচ্চ মাধ্যমিকের বাংলা প্রথম পত্র ও মাধ্যমিকের বাংলা ব্যাকরণ বই দুটি। বই দুটির খুঁটিনাটি সবকিছুই রাখতে হবে আপনার স্মৃতিতে। অথবা বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত মাধ্যমিকের বাংলা ব্যাকরণ বইটি অনুসরণ করতে পারেন।

আর ইংরেজির জন্য প্রথমত যে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে, পাঠ্যবই থেকে ৮টিরও বেশি প্রশ্ন থাকার সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রে পাঠ্যবইয়ের সবগুলো কবিতার প্রত্যেকটা লাইন ধরে ধরে পড়ে নিলে সহজেই উত্তর দেয়া যাবে। ইংরেজিতেও একই পদ্ধতি, ৮ নম্বর না পাওয়া গেলে পাস করা যাবে না। তারচেয়ে বড় কথা, ভালো সাবজেক্ট পেতে হলে যেমন আইন, লোক প্রশাসন, সাংবাদিকতা, ইংরেজি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কসহ অন্যান্য শখের সাবজেক্টে পড়া সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে অনেক বেশি ভোকাবলারি মাথায় রাখতে হবে। গ্রামারের দিকটাও ভালো খেয়াল রাখতে হবে।

নম্বর বাড়ানো ও মেধা তালিকায় উপরে অবস্থান করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল সাধারণ জ্ঞান। কারণ ‘খ’ ইউনিটের সবচেয়ে বেশি নম্বর বরাদ্দ থাকে এই বিষয়টির ওপর। যদিও এর কোন নির্দিষ্ট সিলেবাস নেই তবে বিগত বছরগুলোর প্রশ্ন ঘেঁটে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সরকার ও রাজনীতি, সংগঠন ও সংস্থা, ইতিহাস ও ঐতিহ্য, অর্থনীতি, ভূগোল, চুক্তি ও আইন, ব্যক্তিত্ব, মিডিয়া, সাহিত্য-সংস্কৃতি, খেলাধুলা, দিবস প্রতিপাদ্য, কৃষি, মুদ্রা, ভাষা, আইনসভা, দৈনন্দিন বিজ্ঞান ও সাম্প্রতিক আলোচিত বিষয়গুলোর উপরেই প্রশ্ন হয়েছে। এক্ষেত্রে কারেন্ট বুলেটিন মাসিক পত্রিকাগুলোর তথ্যও অনুসরণ করা যেতে পারে।

‘খ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার ১২০ নম্বরের মধ্যে পাস ৪৮ এবং সাধারণ জ্ঞানে আলাদা করে ১৭ নম্বর না পেলে প্রার্থী ভর্তির অযোগ্য হবে। মনে রাখতে হবে প্রতি ভুল উত্তরের জন্য ০.৩০ নম্বর কাটা যাবে।

ভর্তিচ্ছু সবার জন্য রইল নিরন্তর শুভেচ্ছা।

Previous Post Next Post